
ভাজাপোড়ার বদলে ইফতারে দই-চিড়া-কলা স্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন
কেন?
আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষ ইফতারে অল্প পরিমাণে ফ্রাইড রাইস খেতে পছন্দ করেন। তবে একটানা ভাজা খাবার খেলে অ্যাসিডিটি, পেটের সমস্যাসহ নানা শারীরিক সমস্যা হতে পারে। এভাবে খাওয়ার কারণে অনেক সময় আপনার শরীর ভালো খাবারের পুষ্টি পায় না। 15 রমজান শেষ। আপনি যদি এতদিন ধরে খাচ্ছেন তাহলে ইফতারে ভাজা খাবার বাদ দিন। স্বাস্থ্যকর ইফতার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
একটি মাঝারি আকারের পেঁয়াজ বা তেলে ভাজা পেঁয়াজে 60-70 ক্যালোরি থাকে। আর আমরা ইফতারে এগুলোর একাধিক খাই। এভাবে হিসাব করলে দেখা যাবে আমরা বছরের অন্য সময়ের তুলনায় ইফতারি হিসেবে বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খাই। সারাদিন না খেয়ে রোজা রাখলে শরীরের জন্য অনেক উপকার হয়। কিন্তু যখন আপনি রোজা ভেঙে প্রচুর খাবার খান, তখন তা শরীরের আরও ক্ষতি করে। তাই ইফতারের খাবারকে দুই ভাগে ভাগ করার চেষ্টা করুন। প্রথম অংশে, আপনি মাত্র 1-2 গ্লাস জল, খেজুর, যে কোনও ফল খেতে পারেন। ইফতারের শুরুতে চিনিযুক্ত, নোনতা পানীয় খাওয়া উচিত নয়।
দ্বিতীয় ধাপে, বিরতি নিন এবং শরবত বা জুস পান করুন। সমস্ত পানীয় স্বাস্থ্যকর হবে, যদি চিনি ব্যবহার না করা হয়। পানীয় হতে পারে ফলের রস, লেবুর শরবত, বেলের শরবত, টক দই দিয়ে তৈরি লাচ্ছি, ডাবের পানি ইত্যাদি। ইফতারের প্রধান খাবার পানীয়ের সাথে খেতে হবে। ইফতারের মূল খাবারে প্রতিদিন একই জিনিস না রেখে প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন জিনিস রাখার চেষ্টা করুন।
ইফতারে কি খাবেন
দই-চিড়া-কলা স্বাস্থ্যকর খাবার। ছোলা সিদ্ধ করে শসা-টমেটো মিশিয়ে খেতে পারেন। একদিন ইফতারে খেতে পারেন ঘরে তৈরি চিকেন-ভেজিটেবল স্যুপ। ফল-বাদাম-টক দই মিশিয়ে সালাদ তৈরি করতে পারেন। টেস্টিং সল্ট বা কেচাপ ছাড়াও ভেজিটেবল-ডিম-মুরগির মাংস দিয়ে রান্না করা নুডুলস বা পাস্তাও ভালো ইফতার। সাবুদানা বা চিড়া দিয়ে ফলের তৈরি যেকোনো মিষ্টি তৈরি করতে পারেন। ঘরে তৈরি ফালুদা বা কাস্টার্ড একদিন রাখতে পারেন। একদিন কম তেল ও মশলায় মুরগির মাংস দিয়ে রান্না করা হালিম খেতে পারেন। একদিনে সব খাবেন না। আপনি প্রতিদিন একটি করে খেতে পারেন। এছাড়া আপনি চাইলে ভাত বা রুটি দিয়ে সবজি, মাছ বা মুরগি বা ডাল দিয়ে ইফতার সম্পন্ন করতে পারেন। এর সাথে কিছু ফল বা সালাদ রাখতে পারেন।
দই ও চিড়া খাবেন কেন?
চিড়া কার্বোহাইড্রেটের অন্যতম উৎস। প্রোটিনের উৎস, খাদ্যতালিকাগত ফাইবার, জিঙ্ক, আয়রন। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। সারাদিন রোজা রাখার পর এই চিড়া আমাদের শরীরে যথেষ্ট শক্তি জোগাতে পারে। সাদা মরিচের পরিবর্তে লাল মরিচ খাওয়ার চেষ্টা করুন। দইকে প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক বলা হয়। ল্যাকটোব্যাসিলাস অ্যাসিডোফিলাস এই দইতে প্রোটিনের উৎস, একটি ব্যাকটেরিয়া যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং হজমশক্তি উন্নত করে। এ ছাড়া দইয়ে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্কের মতো উপকারী উপাদান রয়েছে। স্ট্রেস হরমোন 'কর্টিসোল' উৎপাদন কমিয়ে অকাল বার্ধক্য রোধ করে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করে। বিভিন্ন ছত্রাকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করার পাশাপাশি রক্তচাপ ও ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে। মিষ্টি দইয়ের পরিবর্তে টক দই বা বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত প্রোবায়োটিক দই খাওয়ার চেষ্টা করুন।

ইফতারে কলা খেতে পারেন। দইয়ের সঙ্গে কলাও রাখতে পারেন। কলা পটাশিয়াম, খাদ্যতালিকাগত ফাইবার, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন-সি, খাদ্যশক্তি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ একটি ফল। যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের জন্য কলা একটি আদর্শ ফল। কারণ কলায় রয়েছে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণকারী উপাদান। ফলে হজমশক্তি বৃদ্ধি, ওজন কমানো, সুন্দর ত্বক, মানসিক প্রশান্তি, শরীর ঠাণ্ডা রাখাসহ আরও অনেক উপকারী দিক রয়েছে। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে কলার জুড়ি মেলা ভার
এই তিনটি খাবার একসঙ্গে শক্তি বৃদ্ধিকারী হিসেবে কাজ করে। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ এই খাবারটি আমাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়, শরীর ঠান্ডা রাখে। তাই রমজান মাসে এই দই-চিড়া-কলা হতে পারে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার।
আরও পড়ুন>>
How to recognize pure honey
0 মন্তব্যসমূহ